Messerschmit ME-262 in a Dog-fight with P-51 Mustang

মেসারস্মিট এম-ই -২৬২: বিশ্বের প্রথম জেট ফাইটার যা নাজি বাহিনীর হাত ধরে জেট যুগের অভিষেক ঘটিয়েছিল।

এম-ই-২৬২ সৃষ্টির প্রেক্ষাপটঃ ১৯৩৯ থেকে ১৯৪৫ সালের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ টি ছিল ততকালীন ক্ষমতাধর শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলোর দুটি পক্ষের মধ্যে সংঘটিত যুদ্ধ। এটি ছিল ইতিহাসের সবথেকে ধ্বংসাত্মক যুদ্ধের একটি এবং এ যুদ্ধে লাখ লাখ মানুষ প্রাণ হারায়। এর একটি পক্ষকে বলা হতো এক্সিস (Axis), এই এক্সিস জোটের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল জার্মানি, জাপান এবং ইটালি। অপর পক্ষ কে বলা হতো এলাইস (Allies); এটি ছিল ব্রিটেন, আমেরিকা এবং ততকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের। বলা যেতে পারে দুটো বৃহৎ জোটের মধ্যকার সংঘাত এবং সংঘর্ষেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সৃষ্টি।

Jawad
3 min readMar 14, 2023

--

পৃথিবীর প্রথম অপারেশনাল জেট ফাইটার, দ্যা এম-ই-262 (Nickname-Schwalbe, সোয়ালো) এর শক্তির উৎস ছিল দুটি Junker Jumbo -004 জেট ইঞ্জিন; মসৃণ ডানা; সাথে চারটি শক্তিশালী 30mm কামান যা একে আরো দুধর্ষ করে তোলে। উত্তর আমেরিকার P-51 Mustang এর চেয়ে দ্রুত গতিতে ১৯০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায় বেশি বেগ নিয়ে এম-ই-262 ক্ষয়িষ্ণূ জার্মান লুফটওয়াফে (Luftwaffe) কে তার হারিয়ে যাওয়া শ্রেষ্ঠত্ব আবার স্বল্প সময়ের জন্য উপহার দেয় যা কিনা জার্মানরা যুদ্ধের আগে উপভোগ করেছিল।

এম-ই-262 এর প্রাথমিক নকশা আকা শুরু হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধেরও পূর্বে, ১৯৩৯ সালের এপ্রিল মাসে। জেট প্রপালসন এর পরিবর্তে পিস্টন ইঞ্জিন দিয়ে এয়ারক্রাফট টি তার প্রথম মেইডেন ফ্লাইট সম্পন্ন করে ১৮ এপ্রিল,১৯৪১ সালে। ইঞ্জিন,ধাতুবিদ্যা এবং লুফটওয়াফের প্রধান হারমান গোরিং ও এডল্ফ হিটলারের মতো শীর্ষস্থানীয় ব্যাক্তিবর্গের হস্তক্ষেপের কারণে প্রকল্পের অগ্রগতি ব্যহত হয়। তবে এডল্ফ হিটলার চেয়েছিল যে এম-ই-262 কে প্রতিরক্ষামূলক ইন্টারসেপ্টর এর পরিবর্তে গ্রাউন্ড এট্যাক/ বোম্বার হিসেবে পরিচালনা করা হোক। যার ফলে আরেকটি মজবুত এয়ারফ্রেমের প্রয়োজন হয় যা কিনা এর ডেভেলপমেন্ট কে আরো বিলম্বিত করে।১৯৪৪ এর মাঝামাঝি সময়ে এটি জার্মান লুফটওয়াফের বহরে অপারেশনাল কার্যক্রমে যুক্ত হয়। এম-ই-262 এর কয়েকটি ভ্যারিয়েন্ট থাকলে লুফটওয়াফের বহরে থাকা এম-ই-262 এর শক্তি, সক্ষমতা ও অস্ত্র বহন করার ক্ষমতা সে সময়কার জেট চালিত ব্রিটিশ 'গ্লোস্টার মিটিওর' এবং Allied ফোর্সের অন্যসব এলিট ফাইটার থেকেও এগিয়ে ছিল। Allied ফোর্স এর লক্ষ্য ছিল রানওয়ে এবং টেকঅফ এর সময় গেড়িলা আক্রমণ এর মাধ্যমে মেসারস্মেট এম-ই-262 এর আকাশে তান্ডব চালানোর ক্ষমতা নস্যাৎ করা।

ME-262 এর ক্ষীপ্রতা ও উচ্চতর পারফরম্যান্স এর পাইলট দের আত্মবিশ্বাস এতই বাড়িয়ে দিয়েছিল যে এর ইন্টারস্পেট সাকসেস রেশিও হয়ে দাঁড়ায় ১:৪, অর্থাৎ একটি ME-262 Schwalbe তার অনুপাতে ৪ টি শত্রু পক্ষের বিমান ধবংস করতে সক্ষম। তবে আকাশে Allied ফোর্সের প্রভাব এতই বেশি ছিল যে Schwalbe তার পুর্ন সক্ষমতায় পৌছাতে পারেনি। জার্মান এয়ারফিল্ড গুলো ক্রমাগত শত্রুপক্ষের আক্রমণের শিকারের কারণে এবং যুদ্ধের শেষ দিন গুলোতে অবশিষ্ট ME-262 জার্মানির বিখ্যাত অটোবাহন (Autobahn) গুলোর সাথে নির্মিত অস্থায়ী ঘাটি থেকে অপারেশনাল কার্যক্রম চালাতে বাধ্য হয়। ধারণা করা হয় ১,৪৪৩ (কারো কারো মতে এর অধিক) ME-262 নির্মিত হয়েছিল কিন্তু মাত্র ৩০০ টি কে স্বক্রিয় অবস্থায় যুদ্ধে অংশ নিতে দেখা যায়। বাকি এয়ারক্রাফট গুলো প্রশিক্ষণ অবস্থায় দুর্ঘটনা এবং শত্রু পক্ষের এয়ার সুইপ ট্যাকটিক্স ও ক্রমাগত আক্রমণের ফলে অপারেশনাল কার্যক্রম থেকে ছিটকে পড়ে।

ME-262, Allied ফোর্সের বিরুদ্ধে কার্যকর ডগফাইটার হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছিল এবং জার্মান পাইলটরা দাবি করেন যে তারা সর্বমোট ৫৪২ টি বা এর অধিক শত্রু বিমান ধবংস করে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির সাথে সাথে জার্মান এম-ই-262 এর ব্যবহার ও কমে আসতে থাকে, ১৯৫১ সাল পর্যন্ত চেকোস্লোভাক বিমান বাহিনী তখনো কিছু এম-ই-262 পরিচালনা করতো। এছাড়াও ইসরায়েল এর হাতেও কিছু এম-ই-262 এসেছিল যা কিনা 'আভিয়া' নির্মাণ করে, তবে এ ব্যপারে কোনো সু স্পষ্ট প্রমাণ মেলেনি। যুদ্ধের পরবর্তীকালে অসংখ্য এম-ই-262 ক্যাপচার করে মিত্র বাহিনী। এম-ই-২৬২ এর উপর ভিত্তি করে অসংখ্য পরিক্ষা নিরিক্ষা, রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিং পরবর্তি সময়ে উদ্ভাবিত আমেরিকার F-86 Sabre, Mig-15 এবং Boeing B-47 Stratojet এর মতো আরো অনেক বিমান এর নকশা ও টেকনিক্যাল ফিল্ডকে প্রভাবিত করে।

--

--

Jawad

Self-taught Software Engineering Student at OSSU | want to connect with me? Mail- abidibnazam@gmail.com